দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী বিধবা নারীরা স্বামীর কৃষি জমিতে ভাগ পাবেন উল্লেখ করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীর একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতে ব্যারিস্টার উজ্জল ভৌমিক এ মামলায় এমিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) হিসেবে মামলা পরিচালনায় সহায়তা করেন।

তিনি বলেন, ‘১৯৪৭ সালে ইন্ডিয়ান ফেডারেল কোর্টের এ সংক্রান্ত এক মামলার রায়ে কৃষি জমিতে অংশীদারিত্ব হারান হিন্দু বিধবা নারীরা, যা পরবর্তীতে ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের আইনে সংযুক্ত করা হয়। তবে আজকের ঐতিহাসিক রায়ের ফলে ৮৩ বছর পর স্বামীর সম্পত্তিতে অধিকার ফিরে পেলেন হিন্দু বিধবা নারীরা। হাইকোর্টের এ রায়ের ফলে এখন থেকে কৃষি জমিসহ স্বামীর সব সম্পত্তিতে স্ত্রীরা ভাগ পাবেন।’

প্রসঙ্গত, দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী, হিন্দু বিধবা নারীরা স্বামীর কৃষি জমিতে অংশীদার হতে পারতেন না। অথচ ১৯৯৬ সালে খুলনার হিন্দু বিধবা নারী গৌরীদাসীর নামে কৃষি জমি রেকর্ড হয়। এর বিরুদ্ধে ওই একই বছর খুলনার বিচারিক আদালতে (বটিয়াঘাটা) মামলা দায়ের করেন গৌরীদাসীর দেবর জ্যোতিন্দ্র নাথ মন্ডল।

শুনানি শেষে বিচারিক আদালত এই মামলার রায়ে বলেন, হিন্দু বিধবারা স্বামীর অ-কৃষি জমিতে অধিকার রাখলেও কৃষি জমির অধিকার রাখেন না।

এরপর সে রায়ের বিরুদ্ধে ১৯৯৬ সালেই গৌরীদাসী খুলনার জজ আদালতে আপিল আবেদন করেন। ওই আবেদনের পর হিন্দু বিধবা নারী স্বামীর কৃষি জমির ভাগ পাবেন বলে রায় দেয়া হয়। এরপর খুলনার জজ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল শুনানি শুরু হয়। উভয়পক্ষের দীর্ঘ শুনানি এবং এমিকাস কিউরিদের মতামত নিয়ে হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করলেন। হাইকোর্ট তার রায়ে বললেন, হিন্দু বিধবা নারীরা অ-কৃষি জমির মতো স্বামীর কৃষি জমিরও মালিক হবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here