মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

আজ ২৬শে মার্চ । মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫৪তম বার্ষিকী আজ। শুধু তাই নয়, এদিনটি আজ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর বাংলাদেশের স্রষ্টা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর বছরও।

একাত্তরের ২৫ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাঙালিদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ও বঙ্গবন্ধুকেও গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। গ্রেফতারের পূর্বে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ওই ঘোষণা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হয়।

মুহূর্তের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়। সেই সময় বাস্তবতা ও নিরাপত্তা জনিত কারণে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার এই ঘোষণা নথি সংরক্ষণ করা সম্ভব ছিল না। পরবর্তী সময়ে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

তৎকালীন ইপিআর-এর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পরে। পরে চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ ও ২৭ মার্চ বেশ কয়েকজন শেখ মুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার মূল্যবান দলিলটি সেখানে লিপিবদ্ধ হয়েছে এভাবে ‘ইহাই হয়তো আমাদের শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এদিন ঢাকাসহ সারাদেশে প্রত্যুষে তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।

কর্মসূচীর মূল আকর্ষণ:

  • প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনি: দিবসটির সূচনা হবে ঢাকাসহ সারাদেশে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে।
  • স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ: সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
  • জাতীয় পতাকা উত্তোলন: সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
  • রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী: দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী প্রদান করবেন।
  • বিশেষ ক্রোড়পত্র, নিবন্ধ ও সাহিত্য সাময়িকী: দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র, নিবন্ধ ও সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ করবে।
  • মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক অনুষ্ঠান: ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করছে। আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রতিযোগিতা: বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।
  • বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সংবর্ধনা: মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে।
  • শিশুপার্ক ও জাদুঘর বিনামূল্যে উন্মুক্ত:দেশের সকল শিশুপার্ক ও জাদুঘর দিবসটি উপলক্ষে বিনা টিকিটে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
  • জাহাজ পরিদর্শন:চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও পায়রা বন্দর এবং ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, বরিশাল ও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজসমূহ জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
    সময়: সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here