dr. Dipu Moni

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেলে খুব শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একইসাথে না খুলে, ধাপে ধাপে খোলা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সংক্রমণের হার ক্রমেই নিচে নেমে আসছে- এটা আমাদের জন্য সুখবর। এই নিম্নগতি থাকলে খুব শিগগিরই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি আছে। শুধু সংক্রমণের হার আরেকটু নিচে নামার অপেক্ষা।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বৈশ্বিক সংকটের শুরু থেকে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত না করে, স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে যেন কাজ করি। আমরা এখন পর্যন্ত সেটাই করছি। তারা যেন পড়াশোনায় পিছিয়ে না পড়ে, এজন্য নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেছি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা পৃথিবীর যে কোনো দেশের তুলনায় বেশি। কারণ এ অসুখে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সবাই শুরু থেকেই সপ্তাহে ৬ দিন হয়তো ক্লাস করার সুযোগ পাবে না। একটু সময় নিয়ে হবে সেটা।

এর আগে সকালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জানান, বাচ্চাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে স্কুল খুললে শ্রেণিভিত্তিক আলাদা আলাদা করে ক্লাস নেওয়া হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুই ভাগে হবে প্রাইমারি শিক্ষার্থীদের ক্লাস। এরমধ্যে থ্রি-ফোর-ফাইভ সপ্তাহে দুইদিন করে ক্লাস নেওয়ার প্ল্যান আছে। আর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস সপ্তাহে একদিন একদিন করে নেয়া হবে। এভাবে আমরা করতে চাচ্ছি। আমাদের কারিকুলাম অনুযায়ী শর্ট একটা সিলেবাসও চিন্তা ভাবনা করছি।

সমাপনী পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, সমাপনী পরীক্ষা সশরীরে হবে নাকি মূল্যায়ন ভিত্তিক হবে এ সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি অনুযায়ী নেওয়া হবে। এ রকম যদি পরিবেশ থাকে তাহলে পরীক্ষা না নিয়ে আমরা গতবার যেভাবে মূল্যায়ন করেছি সেভাবে করব। আমরা তো ওয়াক শিট দিচ্ছি। এই ওয়াক শিটগুলোই আমরা মূল্যায়ন করব। এই শিট অনুযায়ী বাচ্চারা কে কি করল, সেভাবেই আমরা মূল্যায়ন করব।

স্কুল খুললে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই। আমরা যদি স্কুল খুলতে পারি তাহলে অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরীক্ষা নেব।

স্কুল খোলার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যদি পরিবেশ ভালো থাকে তাহলে সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরেও আমরা স্কুল খুলে দিতে পারি। যে কোনো দিন স্কুল খোলার জন্য আমরা প্রস্তুত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিলেই আমরা স্কুল খুলে দিব।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরইমধ্যে ৮৫ ভাগ শিক্ষকদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকিদেরও দ্রুত শেষ করা হবে।

এরআগে গতকাল সোমবার (২৩ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, কীভাবে, যত তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজ খোলা সম্ভব তা নিয়ে শিগগিরই আপনাদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে বসবে। পাবলিকলি বলে দেবে (কবে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে)।

এরআগে করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে এলে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ পর্যন্ত গত ১৭ মাসে দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি বাড়ানো হয়। করোনা সংক্রমণ অব্যাহত থাকায় সবশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান সাধারণ ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অপূরনীয় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে দেশের প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here