কম টাকায় থাইল্যান্ড ভ্রমণ
কম টাকায় থাইল্যান্ড ভ্রমণ

কম টাকায় থাইল্যান্ড ভ্রমণ এখন কোন স্বপ্ন নয়। এছাড়া কম খরচে চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিনই বহু মানুষ থাইল্যান্ড ভ্রমণে (Thailand tour) যাচ্ছেন। ব্যবসা, চিকিৎসা এবং পর্যটন—এই তিনটি কারণেই থাইল্যান্ড বাংলাদেশিদের কাছে একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। এছাড়া কম টাকায় ভ্রমণ থাইল্যান্ডকে আরো জনপ্রিয় করে তুলেছে। ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে, থাইল্যান্ডের দক্ষিণে মালয়েশিয়া, পশ্চিম-উত্তরে মায়ানমার, উত্তর-পূর্ব দিকে লাওস এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে কম্বোডিয়া অবস্থিত।

থাইল্যান্ড ভ্রমণ: ভিসা কিভাবে পাবেন ? – Thailand Tour

থাইল্যান্ড ভ্রমণ করার জন্য প্রথমে আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে রয়্যাল থাই এমব্যাসিতে । সাধারণত তারা ৩ মাসের জন্য সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা দেয় । তবে প্রয়োজন বশত তারা ৬ মাস বা ১ বছরের ভিসা দিয়ে থাকে ।

থাইল্যান্ড ভ্রমণে ভিসা আবেদনের জন্য যা যা লাগবে

** কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদ আছে এরকম পাসপোর্ট এবং পাসপোর্টের ফটোকপিও লাগবে
** সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর ৩.৫ X ৪.৫ সে মি এর ২ কপি ছবি
** ব্যাংক সল্ভেন্সী সার্টিফিকে্মেন্ট
** ৬ মাস এর ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর কপি ব্যাংকের সীল ও অফিসারের স্বাক্ষর করা)
** চাকুরীজীবীর ক্ষেত্রে এন ও সি সার্টিফিকেট ও অফিসিয়াল ভিজিটিং কার্ড
** ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে নোটারী করা ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি এবং অংশীদার হলে মেমোরেন্ডাম এর ফটোকপি

থাইল্যান্ড ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার স্থান:

থাইল্যান্ড ভ্রমণ করার জন্য ভিসার প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র প্রস্তুত হয়ে গেলে, এবার এগিয়ে যাওয়া যাক আবেদন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়ায়। বাংলাদেশে থাইল্যান্ড ভিসা আবেদন গ্রহণকারী দুটি প্রধান সংস্থা হল:

  • সাইমন গ্লোবাল: এই সংস্থা ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামে তাদের ভিসা আবেদন কেন্দ্র পরিচালনা করে।
  • ভিএফএস গ্লোবাল: এই সংস্থা ও বাংলাদেশের তিন বিভাগে তাদের ভিসা আবেদন গ্রহণ করে।

আপনি যে কোনো একটি কেন্দ্রে গিয়ে আপনার আবেদন এবং কাগজপত্র জমা দিতে পারবেন। কোন কেন্দ্রে যাবেন তা নির্ধারণের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করতে পারেন:

  • আপনার অবস্থান: আপনার জন্য কোন কেন্দ্রটি সবচেয়ে কাছে এবং যাতায়াতে সুবিধাজনক।
  • কেন্দ্রের ব্যস্ততা: কোন কেন্দ্রে সাধারণত কম ভিড় থাকে, সেটি জেনে নেওয়া ভালো।

আবেদন জমা দেওয়ার সময় নিশ্চিত করুন যে:

  • আপনার সকল কাগজপত্র সঠিকভাবে পূরণ করা হয়েছে।
  • পাসপোর্টের বৈধতা কমপক্ষে ৬ মাসের জন্য থাকবে।
  • আপনার কাছে যথেষ্ট পরিমাণ ভ্রমণ খরচের প্রমাণ রয়েছে।
  • ফিরতি টিকিট বা ভ্রমণ পরিকল্পনা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে।

মনে রাখবেন: ভিসা আবেদন প্রক্রিয়াটি কিছুটা সময় সাপেক্ষ হতে পারে। তাই, আপনার ভ্রমণের তারিখ অনুযায়ী যথেষ্ট আগে আবেদন জমা দেওয়া উচিত।

থাইল্যান্ড ভ্রমণ বিস্তারিত তথ্যের জন্য:

  • সাইমন গ্লোবালের ওয়েবসাইট  – https://saimonglobal.com
  • ভিএফএস গ্লোবালের ওয়েবসাইট  – https://visa.vfsglobal.com
  • থাই দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ভিসা সংক্রান্ত নির্দেশাবলী দেখুন – https://thaivisabd.com/tourist-visa/

থাই দুতাবাসের ঠিকানাঃ ১৮-২০ মাদানী রোড, বারিধারা, ঢাকা-১২১২ ফোনঃ ৮৮১২৭৯৫-৬, ৮৮১৩২৬০-১, ফ্যাক্সঃ-৮৮৫৪২৮০/৮৮৫৩৯৯৮

থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ দুতাবাসের ঠিকানাঃ  বাড়ি# ৭২৭, থংগলোর, সই-৫৫, সুলতুম্ভিট রোড, ব্যাংকক-১০১১০, থাইল্যান্ড। ফোনঃ- ৩৯২৯৩৭-৮, ফ্যাক্সঃ-৩৯১৮০৭০

কম টাকায় থাইল্যান্ড ভ্রমণ: যেভাবে যাবেন ?

বাংলাদেশ বিমান এবং ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স দিয়ে থাইল্যান্ডে যেতে পারবেন । এছাড়াও থাই এয়ার, ব্যাংকক এয়ার, মালেশিয়া এয়ার, চায়না ইস্টার্ণ, জেট এয়ার ও ইন্ডিয়া এয়ার ও আপনি যেতে পারেন।

পর্যটন মেলা, ঈদ, বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স গুলো ভিসা ফি, ফ্রি বুকিং, টিকিটে ছাড়সহ আকর্ষণীয় প্যাকেজ দিয়ে থাকে। সেদিকে খেয়াল রাখতে পারেন ।

ঢাকা টু থাইল্যান্ড বিমান ভাড়া কত

থাইল্যান্ড ভ্রমণে বিমানের টিকেট খরচ নির্ভর করে আপনি কোন বিমানে করে যেতে চান । বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স থেকে শুরু করে বিদেশী অনেক এয়ারলাইন্স রয়েছে । ২৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০,০০০ টাকার উপরে টিকেটর দাম রয়েছে ।

সবচেয়ে ভালো হবে আপনার বাজেটের উপর নির্ভর করে এয়ারলাইন্স সিলেক্ট করুন এবং বিভিন্ন অফারের দিকে খেয়াল রাখুন । তবে ২-৩ মাস আগে টিকেট কেটে রাখলে দাম কিছুটা কম পাওয়া যায় ।

ঢাকা থেকে থাইল্যান্ড যাওয়ার বিমান ভাড়া বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে, যেমন:

  • যাত্রার সময়: উচ্চ চাহিদার সময় (যেমন ছুটির দিন বা উৎসবের সময়) ভাড়া বেশি হতে পারে।
  • এয়ারলাইন্স: বিভিন্ন এয়ারলাইন্স বিভিন্ন ধরনের সুবিধা এবং ভাড়া দেয়।
  • বুকিংয়ের সময়: আগে বুক করলে সাধারণত ভাড়া কম পাওয়া যায়।
  • ফ্লাইটের ধরন: সরাসরি ফ্লাইটের তুলনায় কানেকটিং ফ্লাইটের ভাড়া কম হতে পারে।

ভাড়া খুঁজে বের করার সহজ উপায়

  • অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি: অনালাইনে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির ওয়েবসাইটগুলোতে আপনি ঢাকা থেকে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন গন্তব্যে বিমান ভাড়া তুলনা করতে পারবেন।
  • এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইট: ইউএস-বাংলা, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, থাই এয়ারলাইন্স ইত্যাদি এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইটে সরাসরি বুকিং করতে পারবেন।

নিচে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের কিছু ভাড়ার তালিকা দেয়া হল, এটা যেকোন সময় পরিবর্তন হতে পারে।

কম টাকায় থাইল্যান্ড ভ্রমণ

কম টাকায় থাইল্যান্ড ভ্রমণ - Thailand travel

বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ড যেতে কত সময় লাগে

বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ড যেতে কত সময় লাগে, সেটা নির্ভর করে বিমানের ধরন, রুট এবং স্টপওভারের উপর। সাধারণত, একটি সরাসরি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে ব্যাংকক যেতে প্রায় ২:৩০ মিনিট থেকে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে।

  • বিভিন্ন ফ্লাইটের সময়:
  • সরাসরি ফ্লাইট: সরাসরি ফ্লাইটে সময় সবচেয়ে কম লাগে। ঢাকা থেকে ব্যাংককের মধ্যে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে।
  • একটি স্টপওভার: যদি আপনি একটি স্টপওভারের সাথে একটি ফ্লাইট বুক করেন, তাহলে সময় আরও বেশি লাগবে। স্টপওভারের সময় এবং গন্তব্যের উপর নির্ভর করে মোট ভ্রমণের সময় পরিবর্তিত হতে পারে।

থাইল্যান্ডে হোটেল ভাড়া:

থাইল্যান্ড ভ্রমণ করতে যাওয়ার আগে অবশ্যই হোটেল বুকিং করে যাওয়া ভাল। এখানে বিভিন্ন মানের হোটেল পাওয়া যায়। ১০০০ টাকায়ও হোটেল পাওয়া যায় । তবে সবচেয়ে ভালো হবে, আপনার পরিচিত কেও ভ্রমণ করে আসলে তার কাছে হোটেল ভাড়া সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন ।

এছাড়াও অনলাইনে বিভিন্ন হোটেল বুকিং এজেন্সী রয়েছে । তাদের ওয়েবসাইটে হোটেল ভাড়া জানতে পারবেন এবং বাংলাদেশের অনেক পর্যটন প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য অল্প খরচে রিসোর্ট-হোটেল ভাড়া করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে ।

থাইল্যান্ডে সেরা অনলাইন হোটেল বুকিং প্ল্যাটফর্ম (Top Online Hotel Booking Platforms in Thailand )

থাইল্যান্ড একটা চমৎকার পর্যটন গন্তব্যস্থান। আপনার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আরও সুন্দর করার জন্য, থাকার জন্য সঠিক জায়গা খুঁজে পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন, থাইল্যান্ডের শীর্ষ অনলাইন হোটেল বুকিং প্ল্যাটফর্মগুলো দেখে নেওয়া যাক:

  • Booking.com: বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়, Booking.com এর বিস্তৃত ধরণের থাকার ব্যবস্থার জন্য সর্বদা সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়। আপনি যদি বিলাসবহুল রিসোর্ট, আরামদায়ক বুটিক হোটেল বা সাশ্রয়ী গেস্ট হাউস খুঁজছেন, Booking.com আপনার জন্য উপযুক্ত।
  • Agoda: আগোদা আরেকটি জনপ্রিয় পছন্দ, বিশেষ করে এশিয়াতে। এটি থাইল্যান্ড জুড়ে বিভিন্ন ধরণের হোটেল, রিসোর্ট এবং গেস্ট হাউসের ভাড়া অফার করে। এছাড়াও, এটি প্রায়শই প্রতিযোগিতামূলক মূল্য এবং বিশেষ ডিল সরবরাহ করে।
  • Expedia Group: এক্সপিডিয়া হল একটি সুপরিচিত প্ল্যাটফর্ম যা বিভিন্ন উত্স থেকে হোটেলের তালিকা সংগ্রহ করে। এখানে আপনি বিভিন্ন ধরণের থাকার ব্যবস্থার সমাহার পাবেন।
  • Trip.com: যদিও Trip.com সাধারণত ফ্লাইটের সাথে সম্পর্কিত, তবে এটি হোটেল বুকিংও অফার করে। প্রতিযোগিতামূলক মূল্যের জন্য এটি এক্সপ্লোর করার মতো।
  • Airbnb: এয়ারবিএনবি বিশ্বজুড়ে, থাইল্যান্ডে সহ, থাকার ব্যবস্থা খুঁজে পাওয়ার এক দুর্দান্ত প্ল্যাটফর্ম। আপনি যদি সমুদ্র সৈকতের ভিলা, আরামদায়ক জঙ্গলের বাংলো বা একটি আধুনিক ফ্লাটের স্বপ্ন দেখে থাকেন, এয়ারবিএনবির প্রতিটি ভ্রমণকারীর জন্য কিছু না কিছু আছে।
  • হোটেল ওয়েবসাইট (সরাসরি বুকিং): হোটেলের ওয়েবসাইটগুলির মাধ্যমে সরাসরি বুকিং এর কথা ভুলবেন না। অনেক হোটেলই আপনি সরাসরি তাদের সাথে বুকিং করলে বিশেষ ছাড় এবং সুবিধা দেয়। তাদের অফিসিয়াল সাইটগুলি দেখে নিয়ে বুকিং করতে পারেন।

ব্যাংককের শপিং মল: শপিংপ্রেমীদের জন্য এক স্বর্গ

ব্যাংকক, থাইল্যান্ডের রাজধানী, শুধুমাত্র ঐতিহাসিক স্থাপনা ও সুন্দর মন্দিরের জন্যই নয়, এর বিশাল ও বৈচিত্র্যময় শপিং মলগুলোর জন্যও বিখ্যাত। এই মলগুলোতে আপনি পাবেন বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে স্থানীয় হস্তশিল্প, সবকিছু। আসুন জেনে নিই ব্যাংককের কিছু জনপ্রিয় শপিং মল সম্পর্কে:

বিলাসবহুল শপিং:

  • সিয়াম প্যারাগন: থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় এবং বিলাসবহুল শপিং মল। এখানে আপনি লুই ভুইটন, গুচ্চি, হারমেস সহ সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের দোকান পাবেন।
  • এমকোয়ারটিয়ার এবং এমপোরিয়াম: এই দুটি মল সিয়াম প্যারাগনের কাছে অবস্থিত এবং একই ধরনের বিলাসবহুল শপিং অফার করে।
  • আইকন সিয়াম: চাও ফ্রায়া নদীর তীরে অবস্থিত এই মলটি তার আধুনিক ডিজাইন এবং বিলাসবহুল দোকানের জন্য বিখ্যাত।

মধ্যম পর্যায়ের শপিং:

  • এমবিকে সেন্টার: ব্যাংককের সবচেয়ে জনপ্রিয় শপিং মলগুলোর মধ্যে একটি। এখানে আপনি সস্তা থেকে মধ্যম পর্যায়ের সব ধরনের পণ্য পাবেন।
  • দ্য প্লাটিনাম ফ্যাশন মল: ফ্যাশনপ্রেমীদের জন্য স্বর্গ। এখানে আপনি সস্তায় ফ্যাশন পোশাক, জুতা এবং এক্সেসরিজ পাবেন।
  • সেন্ট্রাল ওয়ার্ল্ড: একটি বিশাল শপিং কমপ্লেক্স, যেখানে আপনি বিলাসবহুল ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে স্থানীয় দোকান সবকিছু পাবেন।

স্থানীয় বাজার:

  • চাতুচাক উইকেন্ড মার্কেট: এশিয়ার সবচেয়ে বড় উইকেন্ড মার্কেট। এখানে আপনি হস্তশিল্প, কাপড়, খাবার এবং অনেক কিছু পাবেন।
  • প্রাতুনাম মার্কেট: পাইকারি কাপড়ের জন্য বিখ্যাত।

থাইল্যান্ডের দর্শনীয় স্থান:

দেশটিতে ভ্রমণ করার আগে লিস্ট করুন কোথায় ঘুরতে যাবেন। থাইল্যান্ডে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। সে জন্য হাতে একটু লম্বা সময় নিয়ে যাওয়া ভাল । কারণ সেখানে আপনি যা দেখবেন তাই ভাল লাগবে। তারপর ও কিছু উল্লেখযোগ্য যা না দেখলে নয়ঃ

  • পাতায়া বীচ
  • কোরাল আইল্যান্ড
  • ফ্লোটিং মার্কেট
  • সাফারী পার্ক
  • ফুকেট
  • ব্যাংকক এর শপিং মল (Siam center, MVK shopping Mall, Platinum 1 & 2)

থাইল্যান্ডে কম খরচে চিকিৎসা

উচ্চমানের স্বাস্থ্যসেবা, সাশ্রয়ী খরচ এবং স্বাগতম সংস্কৃতির সমন্বয় প্রদান করে, চিকিৎসা পর্যটনের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হিসাবে উঠে এসেছে থাইল্যান্ড। এখানে আপনি কী চিকিৎসা পেতে পারেন তার বিশ্লেষণ দেওয়া হল:

প্রাপ্ত চিকিৎসার ধরন:

  • প্রসাধনী সার্জারি: স্তন বৃদ্ধি, লিপোসাকশন, রাইনোপ্লাস্টি এবং আরও অনেক কিছু।
  • দাঁতের প্রক্রিয়া: দাঁতের ইমপ্লান্ট, দাঁত সাদা করা, অর্থোডন্টিক চিকিৎসা।
  • ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্ট: আইভিএফ, ডিম ফ্রিজিং এবং শুক্রাণু দান।
  • অর্থোপেডিক সার্জারি: যৌগিক প্রতিস্থাপন, স্পাইনাল সার্জারি, স্পোর্টস মেডিসিন।
  • হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ: হৃদয় বাইপাস সার্জারি, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি এবং হৃদযন্ত্রের ভালভ প্রতিস্থাপন।
  • অনকোলজি: ক্যান্সার নির্ণয় এবং চিকিৎসা, কেমোথেরাপি এবং রেডিয়েশন থেরাপি সহ।

থাইল্যান্ডে চিকিৎসা কেন নির্বাচন করবেন?

  • সাশ্রয়ী খরচ: থাইল্যান্ডে চিকিৎসা প্রায়শই পশ্চিমা দেশগুলির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে সস্তা।
  • উচ্চমানের যত্ন: থাইল্যান্ডের অনেক হাসপাতাল এবং ক্লিনিক জেসিআই-অ্যাক্রেডিটেড, যা আন্তর্জাতিক মানের যত্ন নিশ্চিত করে।
  • অভিজ্ঞ পেশাদাররা: থাইল্যান্ডের চিকিৎসা পেশাদাররা অত্যন্ত দক্ষ এবং অভিজ্ঞ, অনেকেই বিদেশে প্রশিক্ষিত।
  • আধুনিক প্রযুক্তি সহ সুবিধা: থাইল্যান্ডের হাসপাতালগুলি আধুনিক প্রযুক্তি এবং সুবিধা দিয়ে সজ্জিত।
  • সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা: থাইল্যান্ড একটি অনন্য সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা প্রদান করে, প্রশান্তি এবং নিরাময়ের সমন্বয় করে।

ব্যাংককে বেসরকারি হাসপাতাল:

  • বুমরুংরাড ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল: বিস্তৃত বিশেষজ্ঞতা এবং আন্তর্জাতিক মানসম্মত একটি বড় বেসরকারি হাসপাতাল।
  • ব্যাংকক হাসপাতাল: এটিও একটি উন্নত মানের বেসরকারি হাসপাতাল, যা থাইল্যান্ডের কয়েকটি জায়াগায় অবস্থিত।
  • সামিতিভেজ হাসপাতাল: হৃদরোগ এবং ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য পরিচিত একটি বেসরকারি হাসপাতাল।
  • পাওলো হাসপাতাল: অর্থোপেডিক সার্জারি এবং ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্টে শক্তিশালী উন্নত মানের একটি বেসরকারি হাসপাতাল।

থাইল্যান্ডে সরকারি হাসপাতাল

থাইল্যান্ডে বেশ কয়েকটি উন্নতমানের সরকারি হাসপাতাল রয়েছে যেগুলো চিকিৎসা সেবায় অত্যন্ত খ্যাতিসম্পন্ন। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য সরকারি হাসপাতালের তালিকা দেওয়া হলো:

  • ১. সিরিরাজ হাসপাতাল (Siriraj Hospital)অবস্থান: ব্যাংকক

বৈশিষ্ট্য: এটি থাইল্যান্ডের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতাল। সিরিরাজ হাসপাতাল মেডিকেল গবেষণার জন্যও বিখ্যাত এবং এখানে অত্যন্ত অভিজ্ঞ ডাক্তার ও আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে। এটি মহারাজা সেরিরাজ মেডিকেল সেন্টার দ্বারা পরিচালিত।
বিশেষ সেবা: জটিল সার্জারি, ক্যান্সার থেরাপি, কার্ডিয়াক কেয়ার।

  • ২. চুলালংকর্ন মেমোরিয়াল হাসপাতাল (King Chulalongkorn Memorial Hospital)
    অবস্থান: ব্যাংকক
    বৈশিষ্ট্য: এই হাসপাতাল থাই রেড ক্রস সোসাইটি দ্বারা পরিচালিত এবং এটি থাইল্যান্ডের সবচেয়ে সম্মানিত সরকারি হাসপাতালগুলোর একটি। হাসপাতালটি সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নত চিকিৎসা প্রদান করে থাকে।
    বিশেষ সেবা: কার্ডিওভাসকুলার সেবা, ক্যান্সার চিকিৎসা, ট্রমা কেয়ার।
  • ৩. রাজাভিতি হাসপাতাল (Rajavithi Hospital)
    অবস্থান: ব্যাংকক
    বৈশিষ্ট্য: এটি থাইল্যান্ডের বৃহত্তম সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে একটি এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। এটি বিশেষ করে মহিলা এবং শিশুদের চিকিৎসায় দক্ষ।
    বিশেষ সেবা: মহিলা ও শিশু স্বাস্থ্য, নেফ্রোলজি, ডায়ালাইসিস, এবং নানাবিধ বিশেষায়িত চিকিৎসা।

থাইল্যান্ড ভ্রমণের উপযুক্ত সময়:

থাইল্যান্ড ভ্রমণের উপযুক্ত সময় আপনার ভ্রমণের ধরন এবং কী কী করতে চান তার উপর নির্ভর করবে। থাইল্যান্ডের জলবায়ু গ্রীষ্মমন্ডলীয় মৌসুমি, যার মানে এখানে তিনটি প্রধান ঋতু রয়েছে:

  • গরম ঋতু (মার্চ-মে): এই সময় থাইল্যান্ডে সবচেয়ে গরম হয় এবং আর্দ্রতাও বেশি থাকে। তবে সৈকতে সময় কাটানো এবং স্নান করার জন্য এটি সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।
  • বর্ষাকাল (জুন-অক্টোবর): এই সময় থাইল্যান্ডে প্রচুর বৃষ্টি হয়। তবে বৃষ্টির ফলে দাম কমে যায় এবং ভিড় কম থাকে। যদি আপনি কম খরচে ভ্রমণ করতে চান তাহলে এই সময় ভালো।
  • শীতকাল (নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি): এই সময় থাইল্যান্ডে সবচেয়ে আদর্শ জলবায়ু থাকে। তাপমাত্রা আরামদায়ক হয় এবং আকাশ পরিষ্কার থাকে। তবে এই সময় ভিড় বেশি থাকে এবং দামও বেশি হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here