ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের মুক্তির দাবিতে ইভ্যালিতে বিনিয়োগ করা গ্রাহকরা বিক্ষোভ করেছেন। তারা বলছেন, তাদের বিনিয়োগ করা টাকা যদি তারা না পান তাহলে তারা গণ-আত্মহত্যা করবেন। তাদের দাবী, ইভ্যালিতে বিনিয়োগ করে এখন তারা নিঃস্ব।

তবে আইন বিশেষজ্ঞদের মতে ইভ্যালির ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য তিনটি পথ খোলা আছে। এর একটি হচ্ছে, ক্ষতিপূরণ চেয়ে দেওয়ানি আদালতে মামলা দায়ের, দ্বিতীয়টি, দাবি আদায়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে অভিযোগ দিতে হবে। তৃতীয়, প্রতারণার জন্য বাংলাদেশ প্রতিযোগী কমিশনে অভিযোগ দিতে হবে গ্রাহকদের। একই সঙ্গে তিনটি পথই তাদের অনুসরণ করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, ই-কমার্স সংক্রান্ত আলাদা কোনও আইন না থাকায় বিদ্যমান আইনে তাদের সাজা এবং এই তিন কৌশলে টাকা ফেরত পাওয়ার জোর সম্ভাবনা আছে।

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আদালতে গ্রাহকদের টাকা ফেরত চেয়ে আবেদন করতে হবে। আদালতের নজরে বিষয়টি আনলে আদালত হয়তো বিবেচনায় নেবেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, কেউ প্রতারিত হলে সে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা করতে পারে। তবে এর আগে একটি আইন করা দরকার। কারণ ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণে আলাদা কোনও আইন দেশে নেই।

বাংলাদেশ প্রতিযোগী কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, চাইলেই কোম্পানিগুলো বাজারে অস্বাভাবিক কম মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে পারে না। প্রতিযোগী আইনে এ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ থাকায় তারা ইভ্যালির বিরুদ্ধে প্রাথমিক ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও গ্রাহকের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে নতুন করে আইনের আওতায় আনা যাবে।

এর আগে ইভ্যালির ‘সম্পদের চেয়ে ছয় গুণ বেশি দেনা’ বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে ইভ্যালির মোট দায় ৪০৭ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছে ২১৪ কোটি টাকা, আর মার্চেন্টদের কাছ থেকে বাকিতে পণ্য নিয়েছে ১৯০ কোটি টাকার। স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৪ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু সম্পদ আছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here