দেশে প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আর সারা বিশ্বে এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশে। এটি এখন একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অনেকেই মনে করেন শুধুমাত্র বয়স্কদেরই বুঝি এই সমস্যা দেখা দেয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে যেকোনো বয়সের মানুষই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে হতে পারে আরো অনেক রোগ। ডায়াবেটিস হলে দেহ যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন উৎপাদনে অক্ষম হয়ে পড়ে। ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় অস্বাভাবিক হারে।
রক্তে সুগারের মাত্রা খুব বেশি বেড়ে গেলে ক্লান্তি, ঘন ঘন প্রস্রাব, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়। ডায়াবেটিস কখনো পুরোপুরি ভালো হয় না। তবে এর লক্ষণগুলো দূর করা যায় এবং নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এই রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনি যা করবেন-
ওজন স্বাভাবিক রাখা
দেহের ওজন স্বাস্থ্যকর মাত্রায় নিয়ন্ত্রিত রাখার মধ্য দিয়ে শুধু ডায়াবেটিসই নয় বরং আরো নানা ধরনের রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকা যায়। স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৭০ শতাংশ কমে আসে।
ফাস্টফুড পরিহার করা
ফ্রাইস, পিজ্জা, বার্গারের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলে স্থূলতা, উচ্চ কোলেস্টেরল, হজমে সমস্যা এবং হৃদরোগের মতো নানা রোগ দেখা দিতে পারে। এসব খাবার দেহে ইনসুলিনের মাত্রায়ও ক্ষতিকরভাবে হেরফের ঘটিয়ে দিতে পারে, যা থেকে ডায়াবেটিসও হতে পারে।
প্রচুর হাঁটাহাঁটি করা
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক সেরা ব্যায়ামগুলোর একটি হাঁটা। প্রতিদিন সকালে বা বিকালে অন্তত ৪০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করলেই ডায়াবেটিসেরও ঝুঁকিও কমে আসবে।
সালাদ খাওয়া
প্রতিদিন এক বাটি সালাদ খান। যার মধ্যে থাকবে গাজর, শসা, লেটুস, টমেটো, পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি। প্রতিদিন দুপুরে বা রাতে ভারী খাবার খাওয়ার আগে এই সালাদ খেতে হবে। সালাদে এক চা চামচ ভিনেগারও যুক্ত করতে পারেন। ভিনেগার রক্তকে কমমাত্রায় সুগার শোষণে সহায়তা করে। আর রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমবে।
খাওয়ার আগে এবং দুই ঘণ্টা পরে পরীক্ষা করুন
এইভাবে পরীক্ষা করলে বুঝতে পারবেন যে আপনার ওষুধগুলো আসলে কাজ করছে কিনা। এটি আপনাকে বুঝতে সাহায্য করবে, খাবারের মাধ্যমে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়েছে কি না। আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে একটি সঠিক ডায়েট প্ল্যান নিন এবং আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করার সঠিক সময় ও কতক্ষণ পরপর করবেন তা জেনে নিন।
মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা
মাথাব্যথা থেকে শুরু করে ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগও হতে পারে অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে। মানসিক চাপ থেকে নিজেকে সবসময় মুক্ত রাখুন। এতে আপনার দেহে কর্টিসোল হরমোনের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাবে।
কফি পান করুন
প্রতিদিন অন্তত দুই কাপ কফি পান করলে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে আসে ২৯ শতাংশ। তবে চিনি ছাড়া কফি পান করতে হবে। কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান এ কাজ করে।