নতুন সরকারকে কেন্দ্র করে তালেবান দলের মধ্যে কোন্দল এর দুই শীর্ষস্থানীয় নেতা, কার্যকরী উপ-প্রধানমন্ত্রী মোল্লা বারাদার এবং আধ্যাত্মিক নেতা হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদার ওপরও প্রভাব ফেলেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ম্যাগাজিন দ্য স্পেকটেটরের এক প্রতিবেদনে এসব উঠে এসেছে। সাম্প্রতিক সংঘর্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকাটি জানিয়েছে, বারাদার গোষ্ঠী এবং হাক্কানি নেটওয়ার্কের মধ্যে সরকার গঠনের আলোচনায় বারাদার ‘প্রধান ক্ষতিগ্রস্ত’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।

দ্য স্পেকটেটর অনুসারে, পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) প্রধানও তালেবান সরকারের সব গুরুত্বপূর্ণ পদ পাকিস্তানের আনুগত্যে গিয়েছে নিশ্চিত করে হাক্কানিদের প্রতিই সমর্থন প্রকাশ করেছেন।

সেপ্টেম্বরের শুরুতে হাক্কানি এবং বারাদারের মধ্যে এক সংঘর্ষের কথাও সংবাদমাধ্যমটি উল্লেখ করেছে। সেদিন কাবুলের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে সরকার গঠন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আফগানিস্তানের মন্ত্রী খলিলুর রহমান হাক্কানি নিজের চেয়ার ছেড়ে বারাদারের দিকে তেড়ে যান এবং তার মুখে ঘুষি মেরে বসেন।

বারাদার একটি ‘সর্বব্যাপী’ মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন; যেখানে তালেবানের বাইরেও নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘুদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যা বহিঃবিশ্বের কাছে অধিকতর গ্রহণযোগ্য হবে।

সংঘর্ষের পর তিনি সাময়িকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান এবং পরে কান্দাহারে আত্মপ্রকাশ করেন। সেখানে তিনি তাকে সমর্থনকারী আফগানিস্তানের উপজাতীয় নেতাদের সাথে একটি বৈঠক করেন এবং তালেবান নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন নেটওয়ার্কে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করতে বাধ্য হন।

দ্য স্পেকটেটরের ভাষ্যে, সে ভিডিও বার্তাটি দেখে মনে হয়েছে, বারাদারকে জিম্মি করা হয়েছে (হোস্টেজ ভিডিও)।

এদিকে আখুন্দজাদা কোথায় আছেন তা এখনো জানা যায়নি বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। তারা লিখেছে, “তাকে দীর্ঘ একটা সময় দেখা বা তার কাছ থেকে কিছু শোনা যায়নি এবং গুজব রয়েছে তিনি মারা গেছেন”।

দলটির শীর্ষস্থানে এই শূন্যতা তালেবান গোষ্ঠীর মধ্যে নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে- যা তাদের দুই দশক আগের শাসনকালে দেখা যায়নি।

উল্লেখ্য, তালেবান এবং হাক্কানি গোষ্ঠী ২০১৬ সালের দিকে একীভূত হয়।

মোল্লা আবদুল গনি বারাদার এবং দোহা আলোচনার সাথে সংশ্লিষ্টরা তালেবানের একটি মধ্যপন্থী ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা করছিল, কিন্তু হাক্কানি নেটওয়ার্ক সমর্থকেরা আত্মঘাতী হামলার প্রশংসা করেছে।

আফগানিস্তানের শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রী খলিল হাক্কানি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন।

অন্যদিকে, হাক্কানিরা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাথে গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট; এমনটি তাদের নামটিও ইসলামাবাদের নিকটে দারুল উলুম হাক্কানিয়া মাদ্রাসা থেকেই নেয়া।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here