পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল পাকিস্তান। রোববার করাচি শহরে প্রধান বিরোধী দলগুলোর কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমাবেশ করেছেন।

ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু করতে নয়টি প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান গণতান্ত্রিক আন্দোলন (পিডিএম) নামে একটি জোট গঠন করেছে। শুক্রবার পাঞ্জাব প্রদেশের গুজরানওয়ালা স্টেডিয়ামের সমাবেশ থেকে বর্তমান সরকারকে উৎখাতের ডাক দেওয়া হয়। ইমরান খান ক্ষমতায় আসার পর এটাই ছিল তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ।

বিরোধীদের অভিযোগ, ২০১৮ সালে কারচুপির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ইমরানকে ক্ষমতায় বসিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।

সমাবেশে পাকিস্তান মুসলিম লীগ নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ইমরানের খানের উদ্দেশে বলেন,আপনি মানুষের কাছ থেকে কাজ ছিনিয়ে নিয়েছেন। আপনি লোকদের মুখ থেকে দিনে দু’বারের খাবার ছিনিয়ে নিয়েছেন।

পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেন,আমার কৃষক ভাইয়েরা না খেয়ে থাকছে। আমাদের তরুণ প্রজন্ম হতাশায় ভুগছে। লাখ লাখ তরুণ আজ বেকার হয়ে হতাশায় দিন কাটাচ্ছে।

করাচির সমাবেশে ৬৩ বছর বয়সী ফকির বালুচ বলেন, মুদ্রাস্ফীতি দরিদ্র নাগরিকদের পিঠ ভেঙে দিয়েছে। তাদের অনেকেই এখন বাচ্চাদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য ভিক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন।

তিনি বলেন, ইমরান খানের এখনই পদত্যাগ করা উচিৎ।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সারাবিশ্বের মতো পাকিস্তানের অর্থনীতিতেও আঘাত হেনেছে। সেখানে মুদ্রাস্ফীতি দুই অঙ্কে পৌঁছে গেছে। প্রবৃদ্ধি পৌঁছেছে নেগেটিভে। এ জন্য ইমরান খানের সরকারকে দায়ী করছে বিরোধী দলগুলো।

ইমরান খান সরকারের ক্ষমতার মেয়াদ দুই বছর। এ সময়ে তিনি ভিন্ন মতাবলম্বী, সমালোচক ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমনপীড়ন চালিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।

পাকিস্তানে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা ২০২৩ সালে।

শুক্রবার এই বিক্ষোভে লন্ডনে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ভিডিও লিঙ্কে বক্তব্য রাখেন। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে জালিয়াতির জন্য দায়ী করেন সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়াকে।

২০১৭ সালে নওয়াজ শরীফকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যও তিনি এই সেনাপ্রধানকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, তার এই উদ্যোগে সহায়তা করেছিল বিচারবিভাগ।

তবে রোববারের বিক্ষোভে নওয়াজের মেয়ে মরিয়ম বলেন, তার দল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নয়। তবে, যদি বলা হয়, যারা বুটের নিচে ব্যালটকে দলিত-মথিত করেছে, তাদের সম্মান করতে, তা হতে পারে না।

এদিকে পাকিস্তানের রাজনীতি বা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার কথা প্রত্যাখ্যান করেছে সেনাবাহিনী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here