চায়নার হুবেই প্রদেশের উহান সিটিতে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ যে নভেল করোনা ভাইরাসটি আবিষ্কৃত হলো, ইতোমধ্যে বিশ্বজুরে এই ভাইরাসে আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা সাড়ে ১৬ লক্ষ, মৃত্যু ১ লক্ষ প্রায়। বাংলাদেশে প্রথম ৩ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ।
এক মাসে আক্রান্ত রোগী ৪ শত ৩০ জন। মারা গেছেন ২৭ জন।গত ৭ দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কোভিড-১৯ রোগী। সেক্ষেত্রে সকলেই কম বেশী করোনা আতংকে আছেন। একটু জ্বর, সর্দি হলেই নিজেকে করোনা রোগী ভেবে হাসপাতালে ছুটছেন করোনা পরীক্ষার জন্য। আপনি কি সত্যি করোনা আক্রান্ত নাকি করোনা আতংকে ভুগছেন?
করোনা আক্রান্ত হলে করনীয়, কি খাবেন, কিভাবে সুস্থ হবেন ? এসব বিষয় নিয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্ষব্যাধি (রেসপিরেটরি) বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাঃ একেএম মোশাররফ হোসেন বলেন।
সাধারণত করোনা রোগী প্রবাস ফেরত, কোন রোগীর সংস্পর্শ বা করোনা এলাকার বাসিন্দা হয়ে থাকেন। অনেক ক্ষেত্রে রোগীর সংস্পর্শ, প্রবাস এসব ইতিহাস রোগীরা লুকিয়ে রাখেন।
করোনার লক্ষণ কি ? সাধারণত করোনা রোগীর প্রথম সপ্তাহে জ্বর থাকে, শুষ্ক কাশি হয়-এরপর কিছু রোগীর শ্বাসকষ্ট হয়। কিছু রোগী সর্দি, গায়ে ব্যথা, মাথা ব্যথা, অরুচি, ক্লান্তির কথা বলেন। এধরনের রোগীদের হাসপাতালে না গেলে হয়। টেলিফোনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
দ্বিতীয় সপ্তাহে ২০ ভাগ রোগীর অবস্হার হঠাৎ অবনতি হয়। শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে, শ্বাসযন্ত্র অকেজো হয়ে যায়। এ অবস্হায় রোগীকে হাসপাতালে নিতে হয়, কখনো আইসিইউতে নিয়ে লাইফ সাপোর্ট দিতে হয়।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে আরো পড়ুন :
করোনা মহামারীতে এজমা রোগীদের করণীয়
গুনাহ মাফের দোয়া – Gunah Mafer Dua | Dua for Forgiveness of Sins
Coronavirus: জেনে নিন কোন হাসপাতালে পাবেন করোনাভাইরাসের চিকিৎসা
আইইডিসিআর (IEDCR) হটলাইন নম্বর, ফেসবুক পেজ, ই–মেইল
টাকার নোটের করোনা থেকে বাঁচার উপায়
Child Vaccine: শিশুদের কোন টিকা কখন দিবেন, কিভাবে দিবেন ?
করোনার টেস্ট কি ? যদি করোনা টেস্টের প্রয়োজন হয়, তবে বাসায় রোগীর নাসারন্ধ্রের শ্লেষ্মা সংগ্রহ করা হয়। এই রোগীদের বেশী ঔষধের প্রয়োজন হয় না। জ্বর বেশী হলে প্যারাসিটামল, ঠান্ডা পানিতে গা মোছান, সর্দির জন্য লোরাটিডিন ইত্যাদি।
করোনা হলে কি খাবেন: নিয়মিত অন্তত ২ লিটার পানি, ফল, পুষ্টিকর খাবার, সুপ, হাল্কা ব্যয়াম উপকারী। বাসায় তাকে থাকতে হবে আইসোলেশানে-সর্বদা মাস্ক পরিধান, বাসার অন্য সদস্যদের থেকে ১ মিটার দূরে, টয়লেট, থালা, গ্লাস, তোয়ালে সব আলাদা থাকবে। মনে রাখতে হবে, তার মাধ্যমে পরিবারের অন্য কেউ যেন করোনা আক্রান্ত না হন। নিয়মিত টেলিফোনে চিকিৎসকের সংগে যোগাযোগ রাখতে হবে।
করোনার ঔষধ কি ? করোনা চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও এজিথ্রোমাইসিনের কথা বলা হয়। তবে বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্হা এখনো এসব ঔষধ করোনা চিকিৎসায় দিতে বলে না। এ পর্যন্ত করোনার কোন প্রতিষেধক ও আবিষ্কৃত হয়নি।
সংক্রমনের ২-১৪ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষন দেখা দেয়। গড়ে ২-৩ সপ্তাহে রোগী সুস্হ হয়ে টেস্ট নেগেটিভ হয়ে যায়।
শতকরা ৯৫ ভাগ করোনা রোগী সুস্হ হয়ে যান। শতকরা ৫ ভাগ রোগী, বিশেষত যারা পন্চাশোর্ধ, ডায়াবেটিস, হার্ট, ফুসফুসের রোগী তারা মারা যান।